নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন পাথরঘাটা সোবাহান সওদাগর মসজিদ মোড়ে অভিযান চালিয়ে একটি দেশীয় তৈরী এলজি, দুই রাউন্ড কার্তুজ ও ৬০৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই মাদক কারবারীকে আটক করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।এসময় মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার(রেজিঃনং-চট্টমেট্রো-ক-০২-০৯৫৭ )জব্ধ করা হয়।
গতকাল শনিবার ১৩ মার্চ রাত ১১ঃ২৫ মিনিটের সময় অভিযান চালিয়ে সৈয়দ মোঃ তুহিন(৩৪) ও তৌসিফ আহম্মেদ(২৫) নামের দুই জনকে অস্ত্র ও ইয়াবাসহ আটক করা হয় বলে জানান এসআই মোঃ মোমিনুল হাসান।
আটককৃত সৈয়দ মোঃ তুহিন নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন বদর আউলিয়া মাজার সংলগ্ন, খাদেম বাড়ী এলাকার মৃত সৈয়দ প্রকাশ সৈয়দ মোঃ জামান প্রকাশ সৈয়দজ্জামান প্রকাশ মোঃ জামাল ফকিরের ছেলে এবং তৌসিফ আহম্মেদ নগরীর টেরিবাজার এলাকার নাসিম আহম্মেদের ছেলে।
অভিযানে নেতৃত্ব দানকারী কোতোয়ালী থানার এসআই মোঃ মোমিনুল হাসান জানান, কোতোয়ালী থানাধীন পাথরঘাটা সোবাহান সওদাগর মসজিদ মোড়ে চেকপোষ্ট এ ডিউটিকালে সাদা রংয়ের পুরাতন প্রাইভেটকার থামানোর জন্য সংকেত দিলে গাড়ীটি সামনের দিকে দ্রুত বেগে চলে যায়। পরে গাড়ীটির পিছনে ধাওয়া করে কোতোয়ালী থানাধীন পাথরঘাটা বান্ডেল রোডস্থ মা ভবনের সামনে আটক করা হয় এসময় গাড়ীর দরজা খুলে ৪ ব্যাক্তি দৌঁড়ে পালানোর সময় দুই জনকে আটক করা হয় এবং অপর দুইজন পালিয়ে যায়।পরে আসামীদের দেহ তল্লাশীকরে একটি দেশীয় তৈরী এলজি, দুই রাউন্ড কার্তুজ ও ৬০৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয় এবং একটি সাদা রংয়ের পুরাতন প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়।।
তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায় দৌঁড়ে পালানো তাহাদের অপর দুইজনের নাম মোঃ মোস্তফা(৩৫) ও মোঃ জাকির(৩৫) বলে জানায়। আটক ও পলাতক আসামীগণ পরিকল্পিতভাবে অবৈধ অস্ত্রগুলি নিয়ে রাতের বেলায় ইয়াবা ট্যাবলেট প্রাইভেট কারে করে নিয়ে যাচ্ছিল বলে স্বীকার করে।
তিনি আরও জানান, আসামীদের আরো ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা অবৈধ অস্ত্রশস্ত্র সহ ইয়াবা ট্যাবলেট পরিবহন করে এবং কোতোয়ালী এলাকায় বেশীদামে ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রয় করে থাকে। ইয়াবা ট্যাবলেট পরিবহনকালে ও বিক্রয়ের সময় কোথাও বাঁধা পেলে তাদের সাথে থাকা অবৈধ অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখায় বলেও স্বীকার করে।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন জানান, ধৃত ও পলাতক আসামীরা পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়া ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি করে আসছে। আসামী তুহিন কোতোয়ালী থানা ও সিএমপি’র শীর্ষ তালিকাভুক্ত ছিনতাইকারী। তার ভাই জালাল এবং জলিলও সিএমপি পুলিশের তালিকাভুক্ত ডাকাত এবং ছিনতাইকারী। তাদের প্রত্যেক ভাইয়ের আলাদা আলাদা ছিনতাইকারী গ্রুপ আছে। তারা কখনো ডিবি পুলিশ কখনো সিআইডি আবার কখনো র্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে ডাকাতি ছিনতাই করে থাকে। বর্তমানে তারা কোতোয়ালী থানাসহ পুরো চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় ইয়াবা সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে এবং তাদের ব্যবসায়ে কেউ বাঁধা দিলে তাকে অস্ত্র দিয়ে হুমকি দেয় ও ভয়ভীতি দেখায়।
তিনি আরও জানান, তারা সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়ে পুলিশের গতিবিধি লক্ষ্য করে সুযোগ বুঝে বিভিন্ন স্পটে ইয়াবা ট্যাবলেট পাইকারী ও খুচরা বিক্রয় করে আসছে। বিভিন্ন স্পটে তাদের একাধিক লোক রয়েছে পুলিশের গতিবিধি লক্ষ্য করার জন্য। তারা বিভিন্ন মহিলাদেরকে ব্যবহার করে টেকনাফ হতে বিভিন্ন কৌশলে ইয়াবা সংগ্রহ করে নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে থাকে।
উল্লেখ্য যে, আসামী সৈয়দ মোঃ তুহিন এর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, দ্রুত বিচার আইন সহ চোরাই মোবাইল উদ্ধার ও ছিনতাই এর সঙ্গে জড়িত থাকায় সর্বমোট ১৮টি মামলা রয়েছে এবং তৌসিফ আহম্মেদ এর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য ও দ্রুত বিচার আইনে ২টি মামলা রয়েছে।
সিএসপি/কেসিবি/৫ঃ৪৬পিএম